নিজেই পরীক্ষা করুন আপনি করোনা আক্রান্ত কি না!


দেশে এরই মধ্যে তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের দুইজন ইতালি ফেরত এবং একজন তাদের পরিবারের সদস্য। রোববার (৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর মহাখালীতে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান।
দেশে করোনা রোগীর সন্ধানের খবরে ইতোমধ্যেই সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে জন সাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।এখন সবার প্রশ্ন হল একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না তা কীভাবে নির্ণয় করা যাবে? আপনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কি না তা নিজেই পরীক্ষা করতে পারবেন। এ সংক্রান্ত একটি লেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন। এছাড়া লেখাটি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে।
ফেসবুকের ওই পোস্টে বলা হয়েছে, ‘সাধারণত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জ্বর বা কাশি নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই তার ফুসফুসের ৫০% ফাইব্রোসিস (সূক্ষ্ম অংশুসমূহের বৃদ্ধি) তৈরি হয়ে যায়, যার মানে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
তাইওয়ানের বিশেষজ্ঞরা কেউ আক্রান্ত হয়েছেন কিনা, সেটা নিজে নিজেই পরীক্ষা করার একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যেটা কেউ প্রতিদিন সকালে উঠেই কয়েক সেকেন্ডে একবার পরীক্ষা করে নিশ্চিন্ত হতে পারেন। পরীক্ষাটা হলো;
পরিচ্ছন্ন পরিবেশে লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে সেটাকে দশ সেকেন্ডের কিছুটা বেশি সময় ধরে আটকে রাখুন। যদি এই দম ধরে রাখার সময়ে আপনার কোনো কাশি না আসে, বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব না হয়, মানে কোনো প্রকার অস্বস্তি না লাগে, তার মানে আপনার ফুসফুসে কোনো ফাইব্রোসিস তৈরি হয়নি অর্থাৎ কোনো ইনফেকশন হয়নি, আপনি সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত আছেন।জাপানের ডাক্তাররা আরেকটি অত্যন্ত ভালো উপদেশ দিয়েছেন যে, সবাই চেষ্টা করবেন যেন আপনার গলা ও মুখের ভেতরটা কখনো শুকনো না হয়ে যায়, ভেজা ভেজা থাকে। তাই প্রতি পনেরো মিনিট অন্তর একচুমুক হলেও পানি পান করুন।
কারণ, কোনোভাবে ভাইরাসটি আপনার মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করলেও সেটি পানির সাথে পাকস্থলীতে চলে যাবে, আর পাকস্থলীর এসিড মুহূর্তেই সেই ভাইরাসকে মেরে ফেলবে।’
করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে ইউনিসেফের ৮ পরামর্শ
ভাইরাসটি বড় হলেও সেটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে সংগঠনটি আটটি পরামর্শ দিয়েছে। নিচে পরামর্শগুলো দেয়া হল।
১. করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে। মাস্ক ভাইরাসটিকে প্রতিরোধ করতে পারে। তাই মাস্ক ব্যবহার করুন।
২. করোনাভাইরাস মাটিতে অবস্থান করে, এটি বাতাসে ছড়ায় না। তবে সতর্ক থাকতে হবে।
৩. কোনো ধাতব তলে বা বস্তুতে করোনা পড়লে প্রায় ১২ ঘণ্টা জীবিত থাকতে পারে। তাই সাবান দিয়ে হাত ধুলেই যথেষ্ট হবে।
৪. করোনাভাইরাস কাপড়ে ৯ ঘণ্টা জীবিত থাকতে পারে। তাই কাপড় ধুয়ে রোদে দুই ঘণ্টা রাখলে ভাইরাসটি মারা যাবে।
৫. করোনাভাইরাস হাত বা ত্বকে ১০ মিনিটের মতো জীবিত থাকতে পারে। তাই অ্যালকোহল মিশ্রিত জীবাণুনাশক হাতে মেখে নিলে ভাইরাসটি মারা যাবে।
৬. গরম আবহাওয়ায় করোনাভাইরাস বাঁচে না। ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তাপমাত্রাই ভাইরাসটিকে মারতে পারে। কাজেই ভালো না লাগলেও বেশি বেশি গরম পানি পান করুন। আইসক্রিম থেকে দূরে থাকুন।
৭. লবণ মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে গারগল করলে গলা পরিষ্কার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টনসিলের জীবাণুসহ করোনাভাইরাস দূর হবে। এছাড়া ফুসফুসে সংক্রমিত হবে না।
৮. করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নাকে, মুখে আঙ্গুল বা হাত দেয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ, মানব শরীরে জীবাণু ঢোকার সদর দরজা হলো নাক-মুখ-চোখ।

Post a Comment

0 Comments