“#শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলতে হবে #করোণামুক্তজোনহিসাবে”।
কাউকেই দোষারোপ করে কার্যোদ্ধার হবেনা। ভুল শুদ্ধ বুঝিনা অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। ভুল থেকেই শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।ভুল কেন হল? কার জন্য হল এ বিষয় নিয়ে আলোচনা না করে ভুলের যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে দিকে খেয়াল দিতে হবে। যিনি ভুল করেছেন তাকে বাদ দিয়ে নয়, কাজটি তাকে দিয়ে বা তাকে নিয়ে করতে হবে। তবেই ভুলের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। যিনি ভুল করেছেন তার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। একই ভুল সে বার বার করবে না।করোনার শুরু থেকেই কোন কিছুই থেমে নেই। করোনার চিকিৎসা আমরা জানতাম না।তাই বলে কী চিকিৎসা থেমে ছিল?আমাদের ডাক্তার নার্স প্যাথোলজিষ্ট সবাই কিন্তু যার যার মতো কাজ করে গেছেন।ভুল হয়েছে। আবার কাজ করতে করতে তা শুধরেও নিয়েছে। এখন কিন্তু তাদের একটি মোটমুটি ধারণা এসে গেছে।কেউ কী একই ভুল বার বার করেছে?মানুষ ইচ্ছে করে এই একটা জিনিসই করনা আর সেটা হল ভুল।
More Read: প্রধান শিক্ষকদের অধিকার বাস্তবায়নে আসছে নতুন সংগঠন
আজ এক বছর দুই মাসেরও বেশি সময় চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদান বন্ধ আছে। এ বিষয় নিয়ে আমাদের যেন কোন মাথা ব্যাথা নেই। আবার স্কুল খুলে দেওয়ার কথা কেউ বললে একশ্রেণির লোক তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন।মনে হয় যেন বিড়াট কোন অন্যায় করা হয়েছে।স্কুল খোলার বিরুদ্ধে কিছু বলা মানেই মহাজ্ঞানীর পরিচয় দেওয়া। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদানের বিকল্প হিসেবে অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হল।অনলাইন পাঠদান করাতে নানান বিপত্তি আমাদের সামনে হাজির হল।অভিভাবকদের সামর্থের বিষয় আসল।সকল শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে পারেনি ডিভাইসের অভাবে, ইন্টারনেটের অভাবে। সে অভাব পূরণ হওয়ার আগেই শুরু হল নতুন সমস্যা শিক্ষার্থীদের গেইসে আসক্তি। তারা বাবা - মায়ের কষ্টের টাকায় কেনা মোবাইলে দিয়ে এখন গেইস খেলে।তারা গেইমস খেলার সাথে সাথে জড়িয়ে পরছে নানা কু অভ্যাসের সাথে। এগুলো ঘটে যাচ্ছে শিক্ষক, অভিভাবকদের অযান্তে।শিক্ষার্থী তো এখন আর শিক্ষকদের টাচে নেই। শিক্ষার্থী কী করে বা না করে সব দেখাশুনার সার্বিক দায় এখন অভিভাবকের উপরপরেছে।অভিভাবক কী সার্বক্ষণিক তার সন্তানকে সময় দেওয়া সম্ভব? না সম্ভব নয়।এ দায়িত্ব আমরা শিক্ষক ও অভিভাবক ভাগাভাগি করে পালন করেছি এ যাবৎ কাল।এখন সব দায়িত্ব পরেছে অভিভাবকের উপর। অভিভাবকেও তার সংসার চালানোর জন্য কাজে যেতে হচ্ছে। আর এসময়ে শিক্ষার্থীরা বাসায় একা থাকে। তাদের গাইড দেওয়ার মতো কেউ থাকে না।স্কুল যখন খোলা ছিল তখন এ সময় তারা তাদের স্কুলে থাকত সম্মানিত শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে। সেখানে আর যাই হউক না কেন তারা সেখানে মোবাইলে গেইস খেলার সুযোগ পেতনা। স্কুল বন্ধ থাকার এ বারতি সময়ে জড়িয়ে পরছে নানান অপরাধের সাথে। কথায় আছে না অলস মস্তিষ্ক শয়তানে কারখানা।
More Read: “স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি এখন সার্বজনীন ” দুলাল চৌধুরী
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সাথে যুক্ত করার জন্য সম্ভাব্য যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তার সকল উপায় অবলম্বনের পরও আমরা লক্ষ্য করছি শিক্ষার্থীরা শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেতে পারছিনা।বরং শিক্ষার্থীবৃন্দ শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।যুক্ত হচ্ছে ভিডিও গেইমসের মতো ডিজিটাল নেশায়।শুধুই যে শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে তাই নয়। ব্যহত হচ্ছে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ। অভাব দেখা দিচ্ছে সামাজকরনের।যুক্ত হচ্ছে অসামাজিক কার্যকলাপে। তৈরি হচ্ছে কিশোর অপরাধী চক্র।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কুপ্রভাব সমাজকে আস্তে আস্তে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।তৈরি হচ্ছে অন্তসারশূন্য একটি প্রজন্ম। করোনার শুরুতে আমাদের অনেকে মধ্যে এ ধারণা জন্ম নিলেও তা প্রকাশ করার সাহস হয়নি।এখন ও যদি আমরা নির্বিকার বসে থাকি তবে জাতি হিসাবে আমাদের চরম মূল্য দিতে হবে। এ ক্ষতি নবায়ন যোগ্য নয়।।আমরা করোনা মধ্যে বিকল্প ব্যবস্থায় কলকারখানা চালু রাখছি,গার্মেন্টস খুলে রাখছি,শপিং মল খোলা, পরিহনের কারণে রাস্তায় জানজট লেগে আছে,শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। এখানে শুধু সরাসরি পাঠদানের বিকল্প হিসেবে অনলাইনে ক্লাস, সংসদ টেলিভিশনে ক্লাস , Assignment দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা আওতায় আনা যাবে না।এটা এখন প্রমাণিত সত্য সরাসরি পাঠদানের বিকল্প অনলাইন ক্লাস নয়।শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ অব্যাহত রাখার জন্য কিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায় সে বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আমরা আর কোন গবেষণা চাই না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন। কী কী নিয়ম মানলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যায় তার বাস্তব সম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহন করার সময় এখন এসে গেছে।
আমাদের হাজারো মানুষের দাবি স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্কুল খুলে দেওয়ার। স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই হতে পারে করোনা মুক্ত অঞ্চল।
বিভাগ ও জেলা শহরের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতিত দেশের প্রায় অধিকাংশ স্কুল কলেজ রয়েছে প্রশস্থ খেলার মাঠ।অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। তাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষার্থীদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শ্রেনি পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব। আমি মনেকরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষার্থীবৃন্দ শিক্ষার সাথে যুক্ত হবে।শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি ফিরে আসবে।শিক্ষক, শিক্ষার্থী , শিক্ষা কর্মী, ম্যানেজিং কমিটি এবং স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে করোনা মুক্ত রাখা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব।মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ইতিমধ্যে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।আমাদের প্রতিষ্ঠান ভেদে এই প্রস্তুতি ভিন্ন ভিন্ন হবে। যেখানে যে রকম প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব, যে রকম প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, আমরা সাধ্য মত সকল প্রকার প্রস্তুতি নিতে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে আমরা করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী প্রতি আমরা বিনীত অনুরোধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কী ভাবে করোনা মুক্ত রাখা যায় তার উপায় খুজে বের করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পক্ষকে কাজে লাগাতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে রাখর জন্য যে নির্দেশনা পত্র দিয়েছিল তা অনুসরণ করলে চলবে।
তারপরেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে করোনা মুক্ত রাখা কিছু পরামর্শ নিম্নে দেওয়া হলঃ
০১.শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব উদ্যোগে শিক্ষক কর্মচারীদের করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করার জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
০২।অভিভাবকদের শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।
০৩।স্থানীয় প্রশাসনের সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সংযোগ বৃদ্ধি করতে।
০৪।স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা এন জি ও কে কাজে লাগাতে হবে।
৫।কমিউনিটি ইনভলভমেন্ট বাড়াতে হবে।
০৬।স্বাস্থ্যবিধি মানার সম্পূর্ণ দায়িত্ব স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে।
০৭।সংকটকালীন সময়ে বিকল্প ব্যবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে বাড়িতে জনবল নিয়োগ দিতে হবে।
০৮।শিক্ষার্থীদের পূর্বের চেয়ে বেশি করে খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।
০৯।শিক্ষা ক্ষেত্রে এ কর্মযজ্ঞের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।
১০।শিক্ষাক্রম, সিলেবাস তৈরি, পরীক্ষা নেওয়া, জাতীয় ও ধর্মীয় ছূটি বাদে সকল ছুটি প্রদানের ক্ষমতা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে।
১১।শিক্ষার্থীদের মুক্ত পরিবেশে পাঠদানের বিকল্প ব্যবস্থা করতে।
১২।যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারবেনা শুধুমাত্র সেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই শিফট করে ক্লাস চালু করবে।
১৩।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করোনা মহামারি মধ্যে চালু রাখতে গিয়ে যে বাড়তি ব্যয় হবে তা ভর্তুকি হিসেবে সরকারই দিতে হবে।
More Read: “অর্থই অনর্থের মূল” দুলাল চৌধুরী
আমরা যদি করোনার নির্মূলের অপেক্ষায় থাকি আমরা এস.ডি জি. লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ব্যর্থ হব।২০৪১ সালে উন্নত বিশ্বের দেশের হিসেবে মর্যাদা অর্জনের জন্য যে দক্ষ, অভিজ্ঞ,প্রশিক্ষিত, গুণগত শিক্ষায় শিক্ষিত জনশক্তি প্রয়োজন হবে সেইরূপ জন সম্পদ তৈরিতে আমরা ব্যর্থ হব।
তাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে করোনা মুক্ত অঞ্চল তৈরির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।আমার বিশ্বাস এটা করতে আমরা সমর্থ হব।
দুলাল চন্দ্র চৌধুরী
প্রধান শিক্ষক
ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয়।
ও
সাংগঠনিক সম্পাদক
বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ।
0 Comments
Thank you for your message, I see all your messages, it is not possible to reply many times due to busyness, I hope I will reply to everyone in time, thank you for being with me. Thanks you watching my content. Please like, Follow, Subscribe.