বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী শ্রীমতি #দীপ্তি_রায় এর শুভ জন্মদিন স্মরণে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। 🎂🎂

বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী শ্রীমতি #দীপ্তি_রায় এর শুভ জন্মদিন স্মরণে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। 🎂🎂 

( জন্ম : ১৫ ই জুলাই, ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ, কলকাতা )

                ©️ দীপ্তি রায়ের আদিবাড়ি ছিল অধুনা বাংলাদেশের যশোরে, যদিও তাঁর জন্ম হয় কলকাতাতে। তাঁর পিতার নাম অসিতরঞ্জন রায়। খুব ছোটবেলায় দীপ্তিদেবী পিতৃহীন হন এবং দক্ষিণ কলকাতার লেক মার্কেটস্থিত মামার বাড়িতে বড় হন। দীপ্তিদেবী লেখাপড়াতে বেশিদূর এগোতে না পারলেও নাচেগানে আশৈশব থেকেই ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী। ১৯৪৩ সালে পরিচালক ধীরেন গাঙ্গুলির ' দাবি ' ছায়াছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রের আঙিনাতে পদার্পণ করেন তিনি। শোনা যায় পরিচালক -- কন্যা মণিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের কারণেই তিনি মাত্র তেরো বছর বয়সে ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ লাভ করেছিলেন। যদিও দীপ্তি রায় দর্শকদের নজর কাড়েন স্বাধীনতার বছরে অর্থাৎ ১৯৪৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, নরেশ মিত্র পরিচালিত ' স্বয়ংসিদ্ধা ' ছবির মাধ্যমে। এই ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল। ' স্বয়ংসিদ্ধা ' ছবিতে তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় দেখে খুঁতখুঁতে বলে পরিচিত শ্রদ্ধেয় পরিচালক নরেশ মিত্র মহাশয় পর্যন্ত তাঁর প্রশংসা করেছিলেন। এরপরে দীপ্তি রায় অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিটি ছিল ১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ' শেষের কবিতা '। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী এই উপন্যাস অবলম্বনে ছবিতে দীপ্তি রায় অভিনয় করেন ' লাবণ্য ' র ভূমিকায়। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৫৪ সালে ' ষোড়শী ' ছবিতে নামভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। Songs Of Golden Era 🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼

        দীপ্তি রায় অভিনীত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ছবি ----- 'চৌরঙ্গী', ' কাল তুমি আলেয়া ', বিচারক', ' রাজকুমারী ', ' জীবনতৃষ্ণা ', ' সাবরমতী',' দুই পৃথিবী ', ' খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন ', ' কালো ঘোড়া ', ' সাধারণ মেয়ে ', ' নিরুদ্দেশ ', ' গরবিনী ', ' সীমান্তিক ' , ' আঁধি ', ' কালিন্দী ', ' লক্ষহীরা ', ' বড়দিদি ', 'দাতা কর্ণ ', ' হরিশচন্দ্র ', ' মা ', ' ধূপছায়া ', ' অনিন্দিতা ', ' শ্রীকান্তের উইল ', ' যত মত তত পথ ' ইত্যাদি।  

            উল্লেখযোগ্য বিষয় এই যে, মহানায়ক উত্তমকুমারের সঙ্গে তিনি একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন, কখনও মহানায়কের স্ত্রীর চরিত্রে আবার অধিকাংশ ছবিতে মহানায়কের দিদির চরিত্রে অভিনয় করতে তাঁকে দেখেছি আমরা। মূখ্য চরিত্রাভিনেত্রীর ভূমিকা থেকে সরে গিয়ে ক্রমশ দীপ্তি রায়কে দেখা যেতে থাকে শক্তিশালী পার্শ্বচরিত্রাভিনেত্রী হিসেবে। তাঁর অভিনয় ছিল অত্যন্ত সাবলীল, দাপুটে এবং তাঁর চেহারাতে ছিল আভিজাত্য। ' বিচারক ' ছবিতে উত্তমকুমারের স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি রাষ্ট্রপতি পুরস্কার লাভ করেন। চরিত্রটির নাম ছিল ' সুমতি '। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে সন্দেহপ্রবণ স্ত্রী সুমতির ভূমিকায় তাঁর অভিনয় ছিল মনকাড়া। সাহিত্যিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে ' কাল তুমি আলেয়া ' ছবিতে মহানায়কের দিদি ' চারুদি ' র ভূমিকায় তিনি অভিনয় করেন কলকাতা শহরের তথাকথিত এক অভিজাত শ্রেণীর মহিলা হিসেবে। আবার শংকরের জনপ্রিয় উপন্যাস ' চৌরঙ্গী ' ছবিতে তাঁর অভিনীত ' মিসেস পাকড়াশী ' চরিত্রটি দর্শকদের মনে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে যায়। মৃণাল সেন পরিচালিত ' অন্তরীণ ' ( ১৯৯৩ ) ছবিতে শেষবারের মতো তাঁকে রূপালি পর্দাতে দেখা গিয়েছিল। ২০১২ সালে উত্তমকুমার পুরস্কার লাভ করেন দীপ্তিদেবী। Songs Of Golden Era 🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼

             দীর্ঘদিন তিনি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ডায়াবেটিস এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যা তো ছিলই। সেইসঙ্গে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হয়ে ২০১২ সালের ২৬ শে আগস্ট আর্থিক ভাবে চরম বিপর্যস্ত, অবিবাহিতা স্বর্ণযুগের এই অসাধারণ অভিনেত্রীর জীবনাবসান ঘটে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। Songs Of Golden Era 🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼🎼

Post a Comment

0 Comments