আনন্দে ভাসছে সারাদেশ

রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে তোলা 


-যাযাদি শুধু ক্রিকেট নয়, যে কোনো খেলাতেই এটাই প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের। তাই যুব বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা সারাদেশ। বিজয় উলস্নাসে মেতেছে গোটা বাঙালি জাতি।

 রোববার মধ্যরাত থেকে ছড়িয়ে পড়া সে খুশির জোয়ার নগর-বন্দর পেরিয়ে আছড়ে পড়ে গ্রামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। জুনিয়র টাইগারদের জয় উদযাপনে সোমবার ভোর থেকেও দিনভর দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় আনন্দ মিছিল, শোভাযাত্রা ও স্বজন সমাবেশ।

শিরোপা জয়ের বাঁধভাঙা আনন্দের উচ্ছ্বাস ক্রীড়াপ্রেমীদের গন্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ে খেটে খাওয়া দিনমজুর থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত সব শ্রেণির মানুষের মাঝে। উচ্ছ্বসিত মানুষের আনন্দ-ঝড় বয়ে যায় ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। বিশ্ব জয়ের এ আনন্দে শামিল হতে এক মুহূর্তও দেরি করেনি প্রবাসী বাঙালিরাও।

 নানা মাধ্যমে জয়ের নায়কদের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানান তারা। সোমবার সকাল থেকে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট সবখানেই আলোচনার বিষয়বস্তু হয় জুনিয়র টাইগারদের বিশ্বকাপ জয়ের গল্প। দিনভর চলে বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী ও সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগির পালা। আনন্দের আতিশয্যে ক্রিকেটপ্রেমীরা অনেকে নানা ধরনের মিষ্টান্ন কিনে তা বিলিয়েছেন পরিচিতজনদের পাশাপাশি অপরিচিতজনদের মাঝে।

কেউ কেউ আবার খিচুড়ি রেঁধে তা খাইয়েছেন গরিব-দুঃখী ও রাস্তার টোকাইদের। জয়ের আনন্দ আর দেশপ্রেমের জোয়ারে উদ্বেলিত তরুণরা অনেকে লাল-সবুজের পতাকা হাতে ধরে কিংবা যত্ন করে মাথায় বেঁধে ঘুরেছেন সারা শহর। 'বাংলাদেশ' 'বাংলাদেশ' স্স্নোগানে মুখরিত করে তুলেছেন নগরীর চারদিক। তাদের ঘিরে অনুরণিত হয়েছে আনন্দের মূর্ছনা।

সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মনে হয়েছে, 'সবকিছুই যেন থমকে আছে, নগরবাসীর উৎসব আয়োজনে।' এদিকে এ বিশ্ব জয়ের আনন্দ শুধু রাজধানীই নয়, গোটা দেশ থেকেই এসেছে এর উদযাপনের খবর। রংপুর: ঘরের ছেলে আকবরের নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে ভাসছে রংপুর।

 জয় নিশ্চিত হবার পর থেকেই আনন্দ-উলস্নাসে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয় গোটা এলাকা। সোমবার দিনের বিভিন্ন সময় পাড়া-মহলস্নায় বের করা হয় আনন্দ মিছিল ও শোভাযাত্রা। ক্রিকেটপ্রেমী তরুণরা মাথায় লাল-সবুজের পতাকা বেঁধে দলবেঁধে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ান গোটা শহর।

 এ আনন্দ মিছিলে শহরের বিভিন্ন স্তরের প্রায় সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন। পরে মিছিলে অংশগ্রহণকারী ও স্থানীয়দের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এ সময় ক্রিকেটপ্রেমিকরা বলেন, 'আমাদের দেশ এই প্রথম বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

 তাই আমরা অনেক খুশি। আমরা চাই ক্রীড়াঙ্গনের সবকিছুতেই বাংলাদেশ এগিয়ে থাকবে। দেশের টাইগারদের যে দমিয়ে রাখা যায় না তারা এ ভাষার মাসে বুঝিয়ে দিয়েছে। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে খেলোয়াড়দের প্রতি যত্ন নেওয়ার আহবান জানান তারা। রাজশাহী: দক্ষিণ আফ্রিকায় যুব ক্রিকেট ঐতিহাসিক বিজয়ের পর আনন্দে ভাসছে পদ্মাপারের রাজশাহী।

বিভিন্ন এলাকা ও পাড়া-মহলস্নায় পটকা ফাটিয়ে ও বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ক্রিকেটপ্রেমী তরুণ প্রজন্ম। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে রাস্তায় আনন্দ শোভাযাত্রা করেন তারা। টাইগারদের অগণিত সমর্থক খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে শহরের শহিদ কামারুজ্জামান চত্বর, নিউমার্কেট, রাণীবাজার, গণকপাড়া হয়ে সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে গিয়ে মূল আনন্দ মিছিলে যুক্ত হয়।

 বিজয় মিছিলটি এখান থেকে শুরু হয়ে কুমারপাড়া ও আলুপট্টি স্বাধীনতা চত্বরসহ বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় 'বাংলাদেশ-বাংলাদেশ' ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে আশপাশের এলাকা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশের যুব ক্রিকেটাররা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করায় ইতিহাসের পাতায় তা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে। পিরোজপুর: অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বিশ্বকাপ জয়ে বাঁধভাঙা উলস্নাসে মেতেছেন পিরোজপুরে ক্রিকেটপ্রেমীরা।

 দিনভর বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন তারা। সোমবার বেলা ১১টায় শহরের পোস্ট অফিস সড়ক থেকে ক্রিকেটপ্রেমী আজমুল হুদা নিজুমের নেতৃত্বে একটি আনন্দ মিছিল শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুনরায় পোস্ট অফিস সড়কে এসে শেষ হয়। গৌরীপুর (ময়মনসিংহ): বিশ্বকাপ ক্রিকেট জয়ের আনন্দে ভাসছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর।

বিজয়ের পরপরই তরুণরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করে। তবে ঘুমন্ত অনেকে তাতে যোগ দিতে না পারায় সকালে নতুন করে আনন্দ মিছিল বের করেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। পরে এতে যোগ দেন চাকুরে-ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণের খবর পাওয়া গেছে।

সাতক্ষীরা: যুব ক্রিকেটে বিশ্বকাপ জয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করেন সংবাদকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ। তারুণ্যের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের ঢেউ আছড়ে পড়ে শহরে সড়ক থেকে সড়কে। এ সময় রাস্তার দুই ধারের বাসাবাড়িতে থাকা শত শত নারী হাত নাড়িয়ে মিছিলকে অভিবাদন জানান। বিজয়ের এ আনন্দকে সাক্ষী করতে সাধারণ মানুষ মোবাইল ফোনে সেলফি তোলেন।

sourch of : jai jai din.

Post a Comment

0 Comments