ads

CS, RS, SA, PS, BS জরিপ কি?ভূমি জরিপ বা খতিয়ান চেনার সহজ উপায় জেনে নিন ৫ মিনিটেই জমির আরএস খতিয়ান

 রেকর্ড বা জরিপ প্রচলিতভাবে খতিয়ান বা স্বত্ত্বলিপি বা Record of Rights (RoR) নামেও পরিচিত। রেকর্ড বা জরিপের ভিত্তিতে ভূমি মালিকানা সম্বলিত বিবরণ খতিয়ান হিসেবে পরিচিত, যেমন CS খতিয়ানRS খতিয়ান, ইত্যাদি। “সিএস” হলো Cadastral Survey (CS) এর সংক্ষিপ্ত রূপ।



CS, RS, SA, PS, BS, সিটি জরিপ, দিয়ারা জরিপ কি? ভূ-সম্পত্তির জন্য কতটা প্রয়োজন ?

রেকর্ড বা জরিপ প্রচলিতভাবে খতিয়ান বা স্বত্ত্বলিপি বা Record of Rights (RoR) নামেও পরিচিত। রেকর্ড বা জরিপের ভিত্তিতে ভূমি মালিকানা সম্বলিত বিবরণ খতিয়ান হিসেবে পরিচিতযেমন CS খতিয়ানRS খতিয়ান, ইত্যাদি।সিএসহলো Cadastral Survey (CS) এর সংক্ষিপ্ত রূপ।

খতিয়ানঃ

জমি পরিমাপ পদ্ধতি মৌজা ভিত্তিক এক বা একাধিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরণ সহ যে ভূমি রেকর্ড জরিপকালে প্রস্ত্তত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। এতে ভূমধ্যাধিকারীর নাম ও প্রজার নাম, জমির দাগ নং, পরিমাণ, প্রকৃতি, খাজনার হার ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের খতিয়ানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তন্মধ্যে সিএস, এসএ এবং আরএস উল্লেখযোগ্য। ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “থতিয়ান” বলে। খতিয়ান প্রস্তত করা হয় মৌজা ভিত্তিক।

মি জরিপ/রেকর্ড কাকে বলে?

 ভূমি জরিপ হচ্ছে ভূমির মালিকানা সম্বলিত ইতিহাসের সরেজমিন ইতিবৃত্ত। আইনী সংজ্ঞা হচ্ছে, The Survey Act, 1875 এর ২ ধারা অনুযায়ী, ‘জরিপ’-এর অন্তর্ভুক্ত হইবে সীমানা চিহ্নিতকরণ, নদীতীর বরাবর ক্ষয়প্রাপ্ত বা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত জমি, নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে পুনঃউদ্ভব বা নূতন উদ্ভবকৃত জমির পরিমাণ নির্ধারণ এবং জরিপের সহিত যুক্ত পূর্ববর্তী সকল কার্যক্রম। একটি ভূমির মালিক কে এবং তার সীমানা কতটুকু এটা ভূমি জরিপের মাধ্যমে নকশা/ম্যাপ নির্ণয় করা হয়। এই নকশা এবং ম্যাপ অনুসারে মালিকানা সম্পর্কিত তখ্য যেমন ভূমিটি কোন মৌজায় অবস্থিত, এর খতিয়ান নাম্বার, ভূমির দাগ নাম্বার, মালিক ও দখলদারের বিবরণ ইত্যাদি প্রকাশিত হয় যাকে খতিয়ান বলে। রেকর্ড বা জরিপ প্রচলিতভাবে খতিয়ান বা স্বত্ত্বলিপি বা Record of Rights (RoR) নামেও পরিচিত। রেকর্ড বা জরিপের ভিত্তিতে ভূমি মালিকানা সম্বলিত বিবরণ খতিয়ান হিসেবে পরিচিত, যেমন CS খতিয়ান, RS খতিয়ান, ইত্যাদি।

বাংলাদেশে পরিচালিত ভূমি জরিপ বা রেকর্ড 

 ১. CS(সি এস) -Cadastral Survey (1888)

২. RS(আর এস) -Revitionel Survey

৩. SA(এস এ)- (1956)

৪. PS(পি এস) – Pakistan Survey

৫. BS(বি এস)- Bangladesh Survey (1990)

৬. সিটি জরিপ – City Survey

৭. দিয়ারা জরিপ সি.এস. জরিপ/রেকর্ড (Cadastral Survey)


সি এসঃ

জমি পরিমাপ পদ্ধতি ১৯১০-২০ সনের মধ্যে সরকারি আমিনগণ প্রতিটি ভূমিখণ্ড পরিমাপ করে উহার আয়তন, অবস্থান ও ব্যবহারের প্রকৃতি নির্দেশক মৌজা নকশা এবং প্রতিটি ভূমিখন্ডের মালিক দখলকারের বিররণ সংবলিত যে খতিয়ান তৈরি করেন সিএস খতিয়ান নামে পরিচিত।

“সিএস” হলো Cadastral Survey (CS) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। একে ভারত উপমহাদেশের প্রথম জরিপ বলা হয় যা ১৮৮৮ (ভূমি মন্ত্রণালয় অুনসারে ১৮৮৭) সাল হতে ১৯৪০ সালের মধ্যে পরিচালিত হয়। এই জরিপ ১৮৮৫ সালের বঙ্গীয় প্রজাতন্ত্র আইনের ১০ম পরিচ্ছেদে অনুসারে সিলেট ও পার্বত্য জেলা ব্যতীত সারা দেশে পরিচালিত হয়। উক্ত জরিপের মাধ্যমে জমির বিস্তারিত মৌজা নকশা (ম্যাপ) প্রস্তুত করা হয় এবং প্রত্যেক মালিকের জন্য দাগ নম্বর উল্লেখপুর্বক ভূমির বাস্তব অবস্থা, আয়তন, শ্রেণী, পরিমাণ, খাজনার পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখপূর্বক খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। এ জরিপ পি-৭০ সীটে কিস্তোয়ারের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

সিএস জরিপ ১৮৮৮ সালে কক্সবাজারের রামু থানা হতে আরম্ভ হয় এবং ১৯৪০ সালে দিনাজপুর জেলায় শেষ হয়। সে সময়ে সিলেট জেলা আসাম প্রদেশের অধীন থাকায় সিলেট জেলায় সিএস জরিপ হয়নি। তবে জরুরী বিবেচনায় ১৯৩৬ সালের সিলেট প্রজাস্বত্ব আইনের (Sylhet tenancy Act) আওতায় সিলেট জেলার ক্যাডাষ্ট্রাল সার্ভে ১৯৫০ সালে আরম্ভ করা হয় এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর অধীনে ঐ জরিপ ১৯৬৩ সালে শেষ হয়।

সি.এস. জরিপে সময় প্রস্তুতকৃত খতিয়ানে জমিদারগণের নাম খতিয়ানের উপরিভাগে এবং দখলকার রায়তের নাম খতিয়ানের নিচে লেখা হত। সে সময় জমিদারগণ সরকার পক্ষে জমির মালিক ছিলেন এবং রায়তগণ প্রজা হিসেবে শুধুমাত্র ভোগ দখলকার ছিলেন

প্রথম জরিপ এই জরিপ এবং প্রস্তুতকৃত নকশা ও খতিয়ান খুবই নিখুঁত ও নির্ভরযোগ্য হিসেবে এখনো গ্রহণীয়। মামলার বা ভূমির জটিলতা নিরসনের ক্ষেত্রে এই জরিপকে বেস হিসেবে অনেক সময় গণ্য করা হয়।

সি.এস. জরিপ সম্পন্ন হওয়ার সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর এই জরিপ পরিচালিত হয়। জমির অবস্থা, প্রকৃতি, মালিক, দখলদার ইত্যাদি হালনাগাদ করার লক্ষ্যে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। এস.এ. জরিপের সময় সরেজমিনে তদন্ত বা জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা হয়নি। জমিদারদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এস.এ জরিপ বা খাতিয়ান প্রস্তুত করা হয়েছিল যার কারণে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে যায়।

এই ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি জরিপ করার সিদ্ধান্ত নেয় যা আর.এস বা. Revisional Survey জরিপ হিসেবে পরিচিত। এই জরিপে প্রস্তুতকৃত নকশা (ম্যাপ) এবং খতিয়ান নির্ভূল হিসেবে গ্রহণীয়।

আর এসঃ

জমি পরিমাপ পদ্ধতি বা একবার জরিপ হওয়ার পর তাতে উল্লেখিত ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য পরবর্তীতে যে জরিপ করা হয় তা আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত।

দেখা যায় যে, এসএ জরিপের আলোকে প্রস্তুতকৃত খতিয়ান প্রস্তুতের সময় জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে তদন্ত করেনি। তাতে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে গেছে। ওই ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি মাপ-ঝোঁক করে পুনরায় খতিয়ান প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই খতিয়ান আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। সারাদেশে এখন পর্যন্ত তা সমাপ্ত না হলেও অনেক জেলাতেই আরএস খতিয়ান চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হয়েছে।


সরকারি আমিনরা মাঠে গিয়ে সরেজমিনে জমি পরিমাপ করে এই খতিয়ান প্রস্তুত করেন বলে তাতে ভুলত্রুটি কম লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের অনেক এলাকায় এই খতিয়ান বি এস খতিয়ান নামেও পরিচিত। আর.এস. জরিপ ( Revisional Survey)

এস এঃ

জমি পরিমাপ পদ্ধতি ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাসের পর সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ করেন। তৎপর সরকারি জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে মাঠে না গিয়ে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে যে খতিয়ান প্রস্তুত করেন তা এস এ খতিয়ান নামে পরিচিত।

কোনো অঞ্চলে এ খতিয়ান আর এস খতিয়ান নামেও পরিচিত। বাংলা ১৩৬২ সালে এই খতিয়ান প্রস্তুত হয় বলে বেশির ভাগ মানুষের কাছে এসএ খতিয়ান ৬২র খতিয়ান নামেও পরিচিত। এস.এ. জরিপ (State Acquisition Survey)

১৯৫০ সালে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর সরকার ১৯৫৬ সালে সমগ্র পূর্ববঙ্গ প্রদেশে জমিদারী অধিগ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২/৪/১৯৫৬ তারিখে এই আইনের ৩ ধারার আওতাধীন বিজ্ঞপ্তির মূলে সরকার কর্তৃক সকল জমিদারি দখল নেয়ার পর উক্ত এ্যাক্টের ১৭ ধারা মোতাবেক যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় তা এস এ খতিয়ান বলে পরিচিত ।

মূলত, জমিদারী ও মধ্যস্বত্ব বিলোপ করে জমিদারগণকে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ তালিকা প্রণয়ন এবং ভূমি মালিকগণকে/রায়তকে সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আনয়ন করার লক্ষ্যে সে সময় একটি সংক্ষিপ্ত জরিপ ও রেকর্ড সংশোধনী কার্যক্রম পরিচালিত হয় যা পরবর্তীতে এসএ খতিয়ান বলে পরিচিত পায় ।

জরুরী তাগিদে জমিদারগন হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই জরিপ বা খাতিয়ান প্রণয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল।

পি.এস. জরিপঃ (পাকিস্তান সার্ভে)

এস.এ. জরিপকেই পি.এস. জরিপ বলে। ১৯৫৬ হতে ১৯৬২ পর্যন্ত এই জরিপ পরিচালিত হয়।

সিটি জরিপঃ (সিটি সার্ভে)

সিটি জরিপ এর আর এক নাম ঢাকা মহানগর জরিপ। আর.এস. জরিপ এর পর বাংলাদেশ সরকার কর্তিক অনুমতি ক্রমে এ জরিপ ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়। এ যাবত কালে সর্বশেষ ও আধুনিক জরিপ এটি। এ জরিপের পরচা কম্পিউটার প্রিন্ট এ পকাশিত হয়।

দিয়ারা জরিপ কি?

দিয়ারা জরিপ হলো দরিয়া সম্পর্কিত জরিপ। জেগে উঠা নতুন ভূখন্ড (চর) জেলা প্রশাসকের চাহিদার ভিত্তিতে সিকস্তি পয়স্তির কারণে ভৌগলিক সীমারেখা ও স্বত্বের পরিবর্তন হলে নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় নতুন জরিপ করা হয়। এ সমস্ত জরিপে নকশা ও রেকর্ড প্রস্তুত করা হয়। এটি অতি পুরাতন জরিপ।

ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ আরম্ভ হয় ১৮৮৮ সালে, পক্ষান্তরে দিয়ারা জরিপ আরম্ভ হয় ১৮৬২ সালে। দিয়ারা জরিপে সাধারন জরিপের জন্য প্রযোজ্য সকল স্তর অনুসরন করে পয়স্তি ভূমির(চর) নক্সা ও রেকর্ড প্রস্তুত করা হয় দিয়ারা সেটেলমেন্ট অফিসারের নেতৃত্বে ৪টি (রাজশাহী, নরসিংদী, চট্রগ্রাম ও বরিশাল) বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক অফিস ও ক্যাম্পের মাধ্যমে সারাদেশের সুনির্দির্ষ্ট কিছু মৌজায় এ জরিপ কাজ পরিচালিত হয়।

আগে জমির বিভিন্ন রেকর্ড যেমন—এসএ, সিএস, বিআরএস নকল/পরচা/খতিয়ান/সার্টিফায়েড কপি অনলাইনে আবেদন করে সপ্তাহখানেক পর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে পাওয়া যেত। এবার যেখান থেকে খুশি, ইচ্ছামতো সময়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মাত্র ৫ মিনিটেই পাওয়া যাবে জমির আরএস খতিয়ান। সম্প্রতি অনলাইনেই এই সেবা চালু হয়েছে। বিস্তারিত তুহিন মাহমুদের কাছে

খতিয়ান কী?
খতিয়ান জমির পরিচিতির এক প্রকার দলিল। সরকারিভাবে জরিপকালে জরিপ কর্মচারী দ্বারা জমিজমার বিবরণসংবলিত সরকারি দলিলই ‘খতিয়ান’ নামে পরিচিত। খতিয়ান মানেই মৌজার দাগ অনুসারে ভূমির মালিকের নাম, বাবার নাম, ঠিকানা, মালিকানার বিবরণ, জমির বিবরণ, মৌজা নম্বর, মৌজার ক্রমিক নম্বর (জেএল নম্বর), সীমানা, জমির শ্রেণি, দখলকারীর নাম, অংশ প্রভৃতির একটি সুস্পষ্ট হিসাব। যখন একটি পৃথক কাগজে খতিয়ানের অনুলিপি তৈরি করা হয়, তখন সেটিকে পরচা বলে।

খতিয়ানের প্রয়োজনীয়তা
খতিয়ান জমির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল। জমি কেনার সময় ক্রেতাকে অবশ্যই জরিপের মাধ্যমে প্রণীত খতিয়ান ও নকশা যাচাই করতে হবে; জমির মৌজা, খতিয়ান ও দাগ নম্বর, দাগে জমির পরিমাণ জানতে হবে। পরচা যাচাই করে দেখতে হবে। শুধু জমি ক্রয়-বিক্রয়ই নয়, এর সঙ্গে জমি রক্ষণাবেক্ষণ এবং দখলে রাখার ক্ষেত্রেও খতিয়ানের গুরুত্ব রয়েছে। খতিয়ান বা পরচায় কোনো রকম সমস্যা মালিকানা, জমি ক্রয়-বিক্রয় প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই এতে কোনো সমস্যা থাকলে তা ঠিক করে নিতে হবে। মালিকানা নির্ধারণের জন্য জমির পরিচিতির দরকার হয়। বর্তমানে মালিকানা নির্ধারণে এর গুরুত্ব বেশি। খতিয়ানে শুধু মালিকের নামই নয়; বরং এর সঙ্গে বিক্রেতা ক্রয়সূত্রে মালিক হলে তাঁর মালিকানার যোগসূত্র সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। বিক্রেতা উত্তরাধিকারসূত্রে মালিক হলে পূর্বমালিকানা ক্রমান্বয়ে মেলাতে হবে। যদিও শুধু খতিয়ান দেখেই মালিকানা নিশ্চিত হওয়া যাবে না। এর জন্য হস্তান্তর দলিল, দখল, দাখিলা—সব কিছুর সমন্বয় প্রয়োজন। এ ছাড়া ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, দখলের প্রমাণ, হস্তান্তর, বিবাদ নিষ্পত্তি সহজকরণ, জমির দাগ, অংশ, হিসসা, শ্রেণি জানার জন্য ভূমি মালিকানার ইতিহাস সংরক্ষণ, জমি বেচাকেনার সময় যাচাই ইত্যাদি কাজে জমির খতিয়ানের প্রয়োজন হয়।

খতিয়ান তোলার আগের পদ্ধতি
আগে জমির খতিয়ান বা পরচা তুলতে সবাইকে জেলা সদরের রেকর্ডরুম থেকে আবেদন করে হাতে লেখা খতিয়ান তুলতে প্রায় এক থেকে দুই মাস সময় লেগে যেত। অল্পদিনে খতিয়ান বের করে দেওয়ার নামে সেখানে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ছিল। সাধারণ জনগণের কাছ থেকে অবৈধভাবে কয়েক শ থেকে হাজার টাকা হাতিয়ে নিত তারা। এসব ভোগান্তি থেকে রেহাই দিতে ২০১১ সালে যশোরের তৎকালীন সহকারী জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান অনলাইনে আবেদনে জমির পরচা সরবরাহ করার উদ্যোগ নেন। পাইলট প্রকল্প শেষে ওই বছরের নভেম্বরে দেশের বাকি ৬৩টি জেলায় কাউন্টার, সার্ভাররুম সেটআপের মাধ্যমে অনলাইনে জমির পরচা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে সে ক্ষেত্রেও আবেদনকারীকে জেলা সদরে যেতে হতো। এর পরের বছর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে একইভাবে জমির পরচা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সারা দেশ থেকে গ্রাহকদের মতামত নিয়ে ২০১৩ সালে পাইলট প্রকল্প হিসেবে সিরাজগঞ্জের ৩০টি ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে ই-ল্যান্ড রেকর্ড সার্ভিস (ইএলআরএস) সিস্টেম চালু করা হয়। আশানুরূপ সাড়া পাওয়ায় পরবর্তীকালে ভূমি মন্ত্রণালয় সারা দেশের সব ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে এই সেবা চালু করে।

আরএস-কে পদ্ধতি চালু
ইএলআরএস সিস্টেমে ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে আবেদন করা গেলেও তাত্ক্ষণিকভাবে খতিয়ান বা পরচা পাওয়ার সুযোগ ছিল না। সপ্তাহখানেক অপেক্ষার পর ওই তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকেই সেটি গ্রহণ করতে হতো। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় খতিয়ানের কপি প্রাপ্তিতে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা পরিহার, সময়, খরচ ও যাতায়াতের ভোগান্তি হ্রাস, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য হ্রাস, ভূমিসংক্রান্ত সেবা আরো স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করা, আরএস খতিয়ানগুলোকে সর্বসাধারণের ব্যবহার উপযোগী করা এবং দেশের সব খতিয়ানের তথ্য একটি প্ল্যাটফরমে আনার জন্য আরএস খতিয়ান সংক্ষেপে ‘আরএস-কে’ পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য কয়েক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের সহায়তায় আরএস খতিয়ানের ডিজিটালাইজড সংস্করণ তৈরির কাজ চলে আসছিল। সর্বশেষ এ বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘হাতের মুঠোয় খতিয়ান’ স্লোগানে সচিবালয়ে আরএস খতিয়ান অনলাইনে অবমুক্তকরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এর ফলে http://land.gov.bd বা http://rsk.land.gov.bd বা http://www.minland.gov.bd বা আরএস খতিয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করার সুবিধা উন্মুক্ত হয়।

দেশে প্রায় ৬১ হাজার ৫০০ (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) মৌজা রয়েছে। এর মধ্যে ৪১ হাজার মৌজার জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ৩২ হাজার মৌজার জরিপে প্রকাশিত এক কোটি ৪৬ লাখ আরএস (১৯৬৫ সাল থেকে চলমান জরিপে প্রস্তুত করা খতিয়ান) খতিয়ানের তথ্য অনলাইনে পাওয়ার সুযোগ করা হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাকি খতিয়ানগুলো ক্রমান্বয়ে যুক্ত হতে থাকবে। জরিপ কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং জরিপ শেষ হয়েছে এমন খতিয়ানগুলো পর্যায়ক্রমে আপলোড করা হবে। জরিপ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর চূড়ান্তভাবে গেজেট প্রকাশিত খতিয়ানও এসব লিংকে আপলোড করা হবে বলে জানানো হয়। ফলে এখন থেকে আর খতিয়ানের অনলাইন কিংবা সার্টিফায়েড কপি পেতে ভূমি অফিসে কিংবা ডিসি অফিসে দৌড়ানোর প্রয়োজন হবে না।

যেভাবে পাবেন আরএস-কে সেবা
অনলাইনে আরএস খতিয়ান পেতে চাইলে আগ্রহীকে প্রথমে

 https://www.land.gov.bd/pages/R-S-Khotian অথবা এই উদ্যোগের মূল ওয়েবসাইট ত্ংশ.ষধহফ.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে যেতে হবে। মূল ওয়েবসাইটের হোম পেইজের মাঝামাঝি লেখা নাগরিক কর্নারে ক্লিক করতে হবে। এরপর খতিয়ান ও দাগের তথ্য অনুসন্ধানের অনলাইন আবেদন পেইজ আসবে। সেখানে ড্রপডাউনের মাধ্যমে নির্ধারিত বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও মৌজা বাছাই করতে হবে। এরপর খতিয়ান নম্বর, বা দাগ নম্বর বা মালিকানার নাম কিংবা পিতা বা স্বামীর নাম দিতে হবে। এর যেকোনো একটি দেওয়ার পর নিরাপত্তার জন্য সেখানে থাকা ‘যোগফল প্রদান করুন’ ঘরটি পূরণ করতে হবে। তারপর ‘নিচে খুঁজুন’ বাটনটি চাপতে হবে। লোডিংয়ের মাধ্যমে নিচে দ্রুততম সময়ে মালিক, অকৃষি প্রজা বা ইজারাদারের তথ্য, দাগের সংখ্যা ও মোট জমির পরিমাণ দেখাবে। সেখানে নিচে ‘এই খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপির জন্য আবেদন করুন’ কিংবা ‘অনলাইন কপির জন্য আবেদন করুন’ নামে দুটি লিংক বাটন আছে।

সেবাগ্রহীতা আরএস খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি (হার্ড কপি) নিতে চাইলে প্রথম বাটনটি চাপতে হবে। তাহলে নতুন একটি পেইজ আসবে। সেখানে সাধারণ নাকি জরুরি ডেলিভারি, ডেলিভারির মাধ্যম অফিস কাউন্টার নাকি ডাকযোগে সেটি নির্বাচন করে দিতে হবে। এরপর নির্ধারিত ঘরে নাম, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ই-মেইল, ঠিকানা বা পোস্টাল অ্যাড্রেস এবং যোগফল প্রদান—ঘরগুলো পূরণ করতে হবে। সাধারণ ডেলিভারিতে পাঁচ দিন এবং জরুরি ডেলিভারিতে তিন দিন সময় লাগবে। অফিস কাউন্টার থেকে নিলে ডেলিভারি চার্জ প্রযোজ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে ইউক্যাশের মাধ্যমে কোর্ট ফি যথাক্রমে ২২ অথবা ২৭ টাকা দিতে হবে। আর ডাকঘরের মাধ্যমে নিলে ডেলিভারি চার্জসহ ইউক্যাশের মাধ্যমে যথাক্রমে সর্বমোট ৭২ টাকা অথবা ৭৭ টাকা পরিশোধ করতে হবে। তাই ইউক্যাশ নম্বর লেখা ঘরে সেবাগ্রহীতা যে ইউক্যাশ নম্বর থেকে ফি পরিশোধ করবেন, সেটি দিতে হবে। এরপর নিচে ‘টাকা পরিশোধ করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। টাকা পরিশোধ হয়ে গেলে আবেদন অনুযায়ী অফিস কাউন্টার কিংবা প্রত্যাশিত ঠিকানায় ডাকযোগে নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে আরএস খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি সরবরাহ করা হবে। অন্যদিকে অনলাইন কপি নিতে চাইলে ‘অনলাইন কপির জন্য আবেদন করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। পরবর্তী পেইজে উপরোক্ত নিয়মে নাম, মোবাইল নম্বর ও যোগফল প্রদান ঘর বাধ্যতামূলকভাবে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ই-মেইল, ঠিকানা ঘরগুলো প্রযোজ্য হলে পূরণ করতে হবে। এরপর নিচে প্রিন্ট বাটন ক্লিক করলে নতুন পেইজে আরএস খতিয়ানের পিডিএফ ওপেন হবে। সেটি প্রয়োজনে ডাউনলোড বা প্রিন্ট করা যাবে।

অ্যাপেও পাওয়া যাবে সেবা
স্মার্টফোনে অ্যাপের মাধ্যমেও সেবাটি দেওয়ার জন্য প্লেস্টোরে ‘আরএস খতিয়ান’ নামে একটি অ্যাপ উন্মুক্ত করা হয়েছে।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.softbdltd.rsk

 লিংক থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। ডাউনলোড ও ইনস্টল সম্পন্ন হলে অ্যাপটি ওপেন করতে হবে। এরপর ওয়েবসাইটের মতোই এই অ্যাপেও একইভাবে আবেদনের মাধ্যমে সেবা পাওয়া যাবে।

আছে ট্র্যাকিং সুবিধাও
যারা সার্টিফায়েড কপির জন্য আবেদন করবেন তাঁরা 

https://www.land.gov.bd/pages/R-S-Khotian 

লিংক কিংবা অ্যাপের মাধ্যমে তাঁদের আবেদন ট্র্যাকিং করতে পারবেন। এ জন্য ট্র্যাকিং বক্সের অধীন আবেদন আইডি, মোবাইল নম্বর এবং যোগফল প্রদান করুন ঘরগুলো পূরণ করে খুঁজুন বাটনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে ওই আবেদনের বর্তমান অবস্থা জানা যাবে।




ভূমি জরিপ: CS, RS, PS, BS সমন্ধে জেনে রাখুন

ভূমি জরিপ/রেকর্ড : ভূমি জরিপ হচ্ছে ভূমির মালিকানা সম্বলিত ইতিহাসের সরেজমিন ইতিবৃত্ত। আইনী সংজ্ঞা হচ্ছে, The Survey Act, 1875 এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালা অনুযায়ী সরকারের জরিপ বিভাগ সরেজমিন জরিপ করে ভূমির মালিকানার যে বিবরণ এবং নকশা তৈরী করে তাই রেকর্ড বা জরিপ। অর্থাৎ রেকর্ড বা জরিপ হচ্ছে মালিকানার বিরবণ এবং নকশার সমন্বয়।
একটি ভূমির মালিক কে এবং তার সীমানা কতটুকু এটা ভূমি জরিপের মাধ্যমে নকশা/ম্যাপ নির্ণয় করা হয়। এই নকশা এবং ম্যাপ অনুসারে মালিকানা সম্পর্কিত তখ্য যেমন ভূমিটি কোন মৌজায় অবস্থিত, এর খতিয়ান নাম্বার, ভূমির দাগ নাম্বার, মালিক ও দখলদারের বিবরণ ইত্যাদি প্রকাশিত হয় যাকে খতিয়ান বলে। রেকর্ড বা জরিপ প্রচলিতভাবে খতিয়ান বা স্বত্ত্বলিপি বা Record of Rights (RoR) নামেও পরিচিত। রেকর্ড বা জরিপের ভিত্তিতে ভূমি মালিকানা সম্বলিত বিবরণ খতিয়ান হিসেবে পরিচিত, যেমন CS খতিয়ান, RS খতিয়ান, ইত্যাদি।
আমাদের দেশে পরিচালিত ভূমি জরিপ বা রেকর্ড গুলো হচ্ছে;
1. CS -Cadastral Survey
2. SA- (1956)
3. RS -Revitionel Survey
4. PS – Pakistan Survey
5. BS- Bangladesh Survey (1990)
ক) সি.এস. জরিপ/রেকর্ড (Cadastral Survey)
“সিএস” হলো Cadastral Survey (CS) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। একে ভারত উপমহাদেশের প্রথম জরিপ বলা হয় যা ১৮৮৯ সাল হতে ১৯৪০ সালের মধ্যে পরিচালিত হয়। এই জরিপে বঙ্গীয় প্রজাতন্ত্র আইনের দশম অধ্যায়ের বিধান মতে দেশের সমস্ত জমির বিস্তারিত নকশা প্রস্তুত করার এবং প্রত্যেক মালিকের জন্য দাগ নম্বর উল্লেখপুর্বক খতিয়ান প্রস্তুত করার বিধান করা হয়। প্রথম জরিপ হলেও এই জরিপ প্রায় নির্ভূল হিসেবে গ্রহণযোগ্য। মামলার বা ভূমির জটিলতা নিরসনের ক্ষেত্রে এই জরিপকে বেস হিসেবে অনেক সময় গণ্য করা হয়।
খ) এস.এ. জরিপ (State Acquisition Survey)
১৯৫০ সালে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর সরকার ১৯৫৬ সালে সমগ্র পূর্ববঙ্গ প্রদেশে জমিদারী অধিগ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয় এরং রায়েতের সাথে সরকারের সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে জমিদারদের প্রদেয় ক্ষতিপুরণ নির্ধারন এবং রায়তের খাজনা নির্ধারনের জন্য এই জরিপ ছিল। জরুরী তাগিদে জমিদারগন হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই জরিপ বা খাতিয়ান প্রণয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল।
গ) আর.এস. জরিপ ( Revisional Survey)
সি. এস. জরিপ সম্পন্ন হওয়ার সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর এই জরিপ পরিচালিত হয়। জমি, মলিক এবং দখলদার ইত্যাদি হালনাগাদ করার নিমিত্তে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। পূর্বেও ভুল ত্রুটি সংশোধনক্রমে আ. এস জরিপ এতই শুদ্ধ হয় যে এখনো জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের ক্ষেত্রে আর, এস জরিপের উপর নির্ভর করা হয়। এর খতিয়ান ও ম্যাপের উপর মানুষ এখনো অবিচল আস্থা পোষন করে।

জমি সম্পর্কিত জ্ঞান আহরণ কিংবা জমি ক্রয়-বিক্রয়, মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনার ক্ষেত্রে খতিয়ান বা পর্চার ধারণা এদেশের মানুষের নিত্যদিনের আবশ্যকীয় বিষয়। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, ভূমির খতিয়ান বা পর্চার ধারণা বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। জমিজমাকে কেন্দ্র করে যে কোন সময় দেখা দিতে পারে বিরোধ, আর এই বিরোধ থেকেই দায়ের হচ্ছে সিংহভাগ দেওয়ানী মোকদ্দমা, পিছিয়ে নেই ফৌজদারী মামলাও।

তাই যে সকল আইনজীবী দেওয়ানী মোকদ্দমা পরিচালনা করতে ইচ্ছুক বা ব্যাংকিং প্র্যাকটিস করতে আগ্রহী শুধু সেই সকল আইনজীবদের জন্যই ভূমির খতিয়ান বা পর্চা সম্পর্কিত জ্ঞান আহরণ করা জরুরী নয় বরং সকলেই এই জ্ঞান আহরণে একটু সচেতন হলেই এ ঝামেলা থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া সম্ভব। বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন অ্যাডভোকেট মাহফুজার রহমান ইলিয়াস। ভূমি জরিপ সম্পর্কে ধারণা ভূমি ও ভূমির মালিকানা বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের সাহায্যে নকশা প্রস্তুত, মালিকানা সংক্রান্ত রেকর্ড ও পরিসংখ্যান প্রণয়ন এবং সংরক্ষণ প্রক্রিয়াকেই ভূমি জরিপ বলে। মূলত স্বত্বলিপি প্রস্তুত করার জন্য এই জরিপ পরিচালিত হয়। ভূমির উপর কার কি রূপ অধিকার তা নিরূপন, ভোগ, ক্রয়-বিক্রয়, নিষ্পত্তি বা ভূমি ব্যবহারের অধিকার নির্দেশ করে, রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধায়নে প্রস্তুত এরূপ আইন স্বীকৃত সর্বজনগ্রাহ্য দলিলের নাম হচ্ছে স্বত্বলিপি (খতিয়ান) বা রেকর্ড অব রাইট্স। এই উপমহাদেশে বিশেষ করে বাংলাদেশ অঞ্চলে প্রথম বিজ্ঞানসম্মত ভূমি জরিপ পরিচালিত হয় মূলত ১৮৭৫ সালের বেঙ্গল সার্ভে এ্যাক্ট এবং ১৮৮৫ সালের বেঙ্গল টেনান্সী এ্যাক্ট এর বিধান অনুসারে। পরবর্তীতে ভূমি জরিপ প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ১৯১৭ সালের টেকনিক্যাল রুলস এর নির্দেশ অনুযায়ী মৌজা ভিত্তিক প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ১৯১৭ সালের টেকনিক্যাল রুলস এর নির্দেশ অনুযায়ী মৌজা ভিত্তিক নকশা এবং ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫৫ সালের প্রজাস্বত্ব বিধিমালা এবং ১৯৩৫ সালের সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট (এস.এস) ম্যানুয়ালের বিধান অনুসারে ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত খতিয়ান (স্বত্বলিপি) বা ভূমির রেকর্ড প্রস্তুত করা হয়।


সুনির্দিষ্ট আইন ও বিধির অনুযায়ী সরকার কর্তৃক প্রকাশিত গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভূমি জরিপ পরিচালিত হয়ে থাকে। বিভিন্ন জমিদারের জমিদারী সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ নিরসন করার নিমিত্তে ১৮৪৬ সাল হতে ১৮৭১ সাল পর্যন্ত সময়ে থাকবাস্ট জরিপ নামে একটি জরিপ কার্য পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমে জমিদারী এলাকার সীমানা নির্ধারণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ জরিপে ভূ-সম্পত্তি ও রাজস্ব এলাকার সীমানা সুচিহ্নিত করা হয়। থাকবাস্ট জরিপ কোন বিজ্ঞানসম্মত জরিপ ছিল না। তাই এ ভূমি জরিপ সম্পূর্ণরূপে ত্রুটিহীন বা সন্তোষজনক ছিল না। এই জরিপের উপর ভিত্তি করে রেভিনিউ সার্ভে নামে আরও একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। এ জরিপকে প্রথম বিজ্ঞান ভিত্তিক জরিপ বলা হয়। কারণ তখনই প্রথমবারের মত এ দেশে দক্ষ আমিন নিয়োগের মাধ্যমে জরিপ কাজ পরিচালিত হয়। তবে তা সত্ত্বেও এই জরিপ বর্তমান সময়ের মত পূর্ণাঙ্গ জরিপ ছিল না। এ দেশের কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি ও আন্দোলনের ফসল হিসেবে ১৮৮৫ সালের বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন (বেঙ্গল টেনান্সী এ্যাক্ট) প্রণীত হয়।


এই আইনের ১০১ ধারার ১নং উপ-ধারায় ভূমি জরিপ করে রায়াতের (প্রজা) অধিকার সম্বলিত খতিয়ান বা রেকর্ড অব রাইট্স প্রণয়ন করার বিধান রাখা হয়। এ বিধানের ভিত্তিতে ১৮৮৮ সনে বর্তমান চট্টগ্রামের রামু থানায় প্রথমবারের মত বিজ্ঞানসম্মত ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (সি.এস) জরিপ শুরু হয়। ভূমি জরিপ এমন একটি কার্যক্রম যা দক্ষ কর্মী বাহিনীর মাধ্যমে বিধিসম্মত সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে কোন সুনির্দিষ্ট এলাকার ভূমি খন্ড সরেজমিনে পরিমাপ করে এর আয়তন ও ভৌগলিক অবস্থান নির্ণয় করা এবং তার মাধ্যমে একটি জরিপ এলাকার মৌজা নকশা প্রস্তুত ও নকশা প্রতিখন্ডে ভূমির মালিক দখলদারের পরিচিতি ও ঠিকানা, ভূমির শ্রেণীবিভাগ, ভূমির সুনির্দিষ্ট পরিমাণ উল্লেখ করে মালিকের জন্য নির্ভরযোগ্য খতিয়ান প্রস্তুত করা। এ ভূমি জরিপকেই প্রচলিত ভাষায় বলা হয় সেটেলমেন্ট অপারেশন।

প্রচলিত কিছু জরিপ প্রদ্ধতি ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৮৭৫ সালের বেঙ্গল সার্ভে এ্যাক্ট, ১৯৩৫ সালের সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট এ্যাক্ট, ১৯৫৫ সালের প্রজাস্বত্ব বিধিমালা, ১৯৫৭ সালের টেকনিক্যাল রুলস, ১৯৫৮ সালে জি.ই.ম্যানুয়াল ও ১৯৯০ সালের ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল এবং এতদ্বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধি-বিধান অনুযায়ী আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত বিভিন্ন জরিপ নিম্নরূপ :


সর্বশেষ ভূমি জরিপ, সি এস খতিয়ান অনলাইনে দেখার নিয়ম Cs sa rs bs, খতিয়ান চেনার উপায় Bs খতিয়ান, Rs খতিয়ান কি, Cs খতিয়ান সি এস খতিয়ান কত সালে হয়, Rs খতিয়ান কত সালে হয় 

 

জমি মাপার সঠিক পদ্ধতি,জমির হিসাব নিকাশ,জমি মাপার পদ্ধতি

জমির নিখুঁত মাপ যেভাবে বের করবেন ! জমির সঠিক হিসাব -- প্রচলিত ধারণার বাইরে 124K ভূমির পরিমাণ পদ্ধতি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় দলিলা লিখন, সরকারি হিসাব অফিসের ...

এবং কোণের জমি মাপার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন।

এবং কোণের জমি মাপার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন। Land Calculation to Easy way University Admission Guideline নিতে চাইলে এই সাইট থেকে

জমি মাপার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন জমি মাপার নিয়ম জমি মাপার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন জমি মাপার নিয়ম Method of Land Measurement

জমির হিসাব জেনে নিন হেক্টর,একর,বিঘা,কাঠা,শতাংশের হিসাব জমি পরিমাপের একক

জমির হিসাব জেনে নিন হেক্টর,একর,বিঘা,কাঠা,শতাংশের হিসাব জমি পরিমাপের একক

জমির দাগ নম্বর দিয়ে দেখেনিন জমি কার নামে আছে।।জমির পর্চা কি ভাবে বের করবেন।।খতিয়ান দেখুন।। ভুমি জরিপ অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই।। online land check।।

খতিয়ান দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই আজ আমি আপনাদের এই ভিডিওতে দেখাবো ঘরে বসে ...

কে কত শতাংশ জমির মালিক জমির খতিয়ান থেকে বের করার পদ্ধতি জেনে

 

কে কত শতাংশ জমির মালিক জমির খতিয়ান থেকে বের করার পদ্ধতি জেনে নিন।Calculate Land cent from Land share পরম করুনাময় অসীম দয়ালু

জমি মাপার সঠিক পদ্ধতি জেনে নিন | জমি মাপার নিয়ম | Method of Land measurement |

জমি মাপার সঠিক পদ্ধতি জেনে নিন | জমি মাপার নিয়ম | Method of Land Measurement | Land Calculation আমার ফেসবুক পেইজের লিংক ... 


 ৪০০ বছরের ভূমির ইতিহাস জেনে নিন// জমির ইতিহাস ।। সি এস এস আর এস আসলে কি

জমি #খতিয়ান#azimuddin ৪০০ বছরের ভূমির ইতিহাস জেনে নিন// জমির ইতিহাস বাংলাদেশ ভূমি ব্যবস্থাপনা ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা ভূমি আইন ১৯৫০

Land Area Calculation at site || How to calculate land area || Land survey || Plot area

 

 

জমি পরিমাপ বা, সার্ভেয়ার আমিনসীপ কোর্স নকসা মাপা পর্ব ১৪ / land Survey Bangla part-14

 

সংশোধনী কাঠা = ৭১৮.৭৫ না পড়ে। কাঠা = ৭১৮.৭৪ হবে এটাই একমাত্র একুরেট হিসাব। ভুমি জরিপ বা জমি মাপা বা আমীনশীপ কোর্সের বা

খতিয়ানের মাধ্যমে জমির মালিকানা বের করার কৌশল -

 

আইনের গল্প

হিসেবে পরিচিত, যেমন CS খতিয়ান, RS খতিয়ান, ইত্যাদি। আমাদের দেশে পরিচালিত ভূমি জরিপ বা রেকর্ড গুলো হচ্ছে;

গুনিয়া স্কেলে জমির নকশা মাপার নিয়ম gunia scale land map measurment সাতকাহন আইনের গল্প

হিসেবে পরিচিত,

যেমন CS খতিয়ান, RS খতিয়ান, ইত্যাদি।

আমাদের দেশে পরিচালিত ভূমি জরিপ বা রেকর্ড গুলো হচ্ছে

গুনিয়া স্কেলে জমির নকশা মাপার নিয়ম

স্পন্সর, প্রমোশন, বিজ্ঞাপন, সহায়তা, অভিযোগ, কপিরাইট ইস্যু সহ যেকোন কারনে ইমেইল করুন

পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ নিয়মে জমি মাপুন D Job School


যেকোন স্পন্সর, প্রমোশন, বিজ্ঞাপন, সহায়তা, অভিযোগ, কপিরাইট ইস্যু সহ যেকোন কারনে ইমেইল করুন

জমি তুমি কার

এক শতক জমি কত হাত বাই কত হাত

এক শতক জমি কিভাবে পরিমাপ করবেন? জমির হিসাব সবচেয়ে সহজ নিয়মে আরো দেখুনঃ ম্যাপের ইঞ্চি জমিতে কত ফুট?

জমির পরিমাপ নির্নয় পদ্ধতি জমির হিসাব বের করার নিয়ম।

জমি মাপতে হলে আপনার যা লাগবে: . একটি ফিতা (১০০ ফিট ফিতা হলে ভালো হয় . একটি সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর . একজন সহযোগি . জমি মাপার

শতাংশ জমি কত ফুট লম্বা এবং কত ফুট চওড়া জেনে নি

Post a Comment

0 Comments