১৯০৮ সালে সেপ্টেম্বর মাসে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী রাজশাহী জেলার তনোর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল মৃত্যুঞ্জয় মৈত্র ও মাতার নাম ছিল মনোমহিনী দেবী। বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী ছিলেন ভারতীয় ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা। বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর যখন তিন বছর বয়স তখন তার পিতা ও মাতার মৃত্যু হয়। তখন তিনি তার মেজদিদির কাছে মানুষ হয়ে উঠেন।
মাত্র ১১ বছর বয়সে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর বিয়ে দেওয়া হয় যতীন্দ্রনারায়ণ ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তিনি স্বামীর বাড়ি থেকে স্বদেশ সেবার অনুপ্রেরণা পান। বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী তার ১৪ বছর বয়সে স্বামী মারা যান। তার সেজ ভাশুর পন্ডিত দিগিন্দ্রনারায়ণ পথ ধরে হতভাগ্য কিশোরী স্বদেশী কার্যের প্রেরণা পান। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বিষ্ণুপ্রিয়ার অশান্ত জীবনে অন্য কিছুতেই শান্তি আসবে না। শান্তি আসবে ত্যাগের পথে ও মানবকল্যাণের পথেই।
বিষ্ণুপ্রিয়াকে ১৯৩১ সালে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। ১৯৩২ সালে ২৬ শে জানুয়ারি যখন স্বাধীনতা দিবস পালন করার জন্য দলে দলে মেয়েরা পথে নেমেছিল তিনি তখন কংগ্রেস নেত্রী লাবণ্যপ্রভা দত্তের কাছে আসেন রাজনৈতিকভাবে যুক্ততার জন্য। তখন বিষ্ণুপ্রিয়া মেয়েদের বেছে বেছে নিয়ে আইন অমান্য আন্দোলনের জন্য পাঠাবার ব্যবস্থা করেন। বিষ্ণুপ্রিয়া প্রায় ২৫-২৬ সত্যাগ্রহীদের সঙ্গে শ্রদ্ধানন্দ পার্কে যান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে। সেখানেই গ্রেপ্তার হন বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী, তার ছয় মাসের জন্য জেল হয়।
প্রথমে হিজলী জেলে, প্রেসিডেন্সি ও বহরমপুর জেলে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী বন্দি ছিলেন। জেলের ভেতরেই কল্যাণী দাস ও সুলতা কর আরো অনেকের সাথে মিশে তিনি বিপ্লবী দলে যোগদান করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে জেল থেকে বেরিয়ে তিনি লাবণ্যপ্রভা দত্তের যুগান্তর বিপ্লবী দলে কাজ করেন। রিভলভার আদান-প্রদান করা, লুকিয়ে বিপ্লবীদের সাহায্য করা, বিপ্লবীদের আশ্রয় দেওয়া সবই তিনি শোভারাণী দত্তের নির্দেশে করতেন।
শেষে আমাদের সকলকে ছেড়ে চির বিদায় নিলেন বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী ১৭ই জুলাই ১৯৮১ সালে।
(তথ্যসূত্র সংগৃহীত)
লেখক::- প্রকাশ


0 Comments
Thank you for your message, I see all your messages, it is not possible to reply many times due to busyness, I hope I will reply to everyone in time, thank you for being with me. Thanks you watching my content. Please like, Follow, Subscribe.