ভারতের অন্যতম মহান মুক্তিযোদ্ধা তিরোট সিং। তিনি ইউ তিরোট সিং সিয়েম নামেও বিশেষ পরিচিত

ভারতের অন্যতম মহান মুক্তিযোদ্ধা তিরোট সিং। তিনি ইউ তিরোট সিং সিয়েম নামেও বিশেষ পরিচিত

 #_আজও_অজানা_রয়ে_গেলো

যখন ব্রিটিশ সরকার কথা দিয়ে কথা রাখেনি, তখন ব্রিটিশ সরকারকে এই দেশ থেকে তারাতেই হবে। ঠিক এমনই এক ভাবনা ছিল ভারতের অন্যতম মহান মুক্তিযোদ্ধা তিরোট সিং। তিনি ইউ তিরোট সিং সিয়েম নামেও বিশেষ পরিচিত। কিন্তু আজকের দিনে আর কজনের মনে আছে এই মুক্তিযোদ্ধার কথা। ইউ তিরোট সিং সিয়েম কেবল মেঘালয়ের নয়, সমগ্র ভারতের অন্যতম মহান মুক্তিযোদ্ধা। এরকম কতই নাম নাজানা বীর যোদ্ধারা ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে। আজ তার শহীদ দিবস। ব্রিটিশ শাসনকে তিনি দেশ থেকে তাড়াতে ছেয়েছেন।
তিরোট সিং-এর জন্ম হয় হয়েছিল ১৮০২ সালে। মেঘালয়ের এই মহান যোদ্ধার জন্য পুরো নর্থ ইস্ট আজও গর্ব করে। তিনি খুব কম বয়সেই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। তিনি ছিলেন খাসি সম্প্রদায় থেকে এবং তিনি খড়সাফ্রা সিয়েমশিপ -এর রাজা (Khadsawphra Syiemship)। তার মধ্যে দেখা যেত সব সময় এক বীর যোদ্ধাকে। রাজা তিরোট সিং স্বয়ং প্রজাগণদের নিয়ে নিজে চিন্তা ভাবনা করতেন। ইতি মধ্যেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ডেবিট স্কর্ট-এর নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকার খাসি পাহাড়ে রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে ইউ তিরোট সিং সিয়ামের কাছ থেকে অনুমতি চেয়েছিল এবং এর বিনিময়ে এই অঞ্চলে মুক্ত বাণিজ্যের মতো অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
রাজা তিরোট সিং ভাবলেন এতে ভালোই হবে। এতে প্রজাগণদের ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধা হবে। সন ১৮২৭ সালে এই নিয়ে ডেবিট স্কর্টকে নিয়ে রাজা তিরোট সিং নিজের মহলে বৈঠকে বসেন। গুয়াহাটির কাছাকাছি রানী থেকে নোয়াখালী হতে সুরমা ঘাঁটি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। সবাই মিলে এই কাজে শামিল হন, কিন্তু একদিন এক বাঙালি সেবক রাজা তিরোট সিংকে গিয়ে জানান যে ব্রিটিশ সরকার এই রাস্তার বদলে প্রজাগণদের কাছ থেকে কর আদায় করার পরিকল্পনা করছেন। এর সঙ্গে রাস্তা পুরোপুরি হয়ে গেলে এই জায়গা গুলো নিজেদের অধীনে করে নেবে। এই কথা শুনে রাজা তিরোট সিংয়ের বুঝতে বেশি সময় লাগলো না।
রাজা তিরোট সিং বুঝতে পারলেন এই রাস্তার সাহায্যে ব্রিটিশ সরকার কি জগণ্য কাজ করতে চাইছিলেন। তিনি সাথে সাথ নোয়াখালী খালি করার আদেশ দেন ব্রিটিশ সরকারকে, কিন্তু ব্রিটিশ সরকার না শুনার ভান করলেন। এর ফলে রাজা তিরোট সিং রেগে গেলেন, আমাদের দেশে এসে আমাদের কথাই শুনতে চাইছেন না। তিনি তার কিছু সৈনিকদের নিয়ে ৪ঠা এপ্রিল ১৮২৯ সালে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং হামলা চালায়। ব্রিটিশরা রাজার হাবভাব দেখে সিলেট ও কামরূপ থেকে সৈনিক নিয়ে যান। রাজা তিরোট সিং শুধু পারম্পরিক যুদ্ধের মতই তীর ধনুক, ভালা ও তলোয়ার নিয়েই লড়াই করেছিলেন। ব্রিটিশদের বন্দুক ও রণনীতি দেখেও তিরোট সিং ও তার সহ যোদ্ধারা হার মেনে নেয়নি।
চার বছর ধরে এই যুদ্ধ চলে, কিন্তু তিরোট সিং-এর বল শক্তি ধীরে ধীরে ক্ষীণ হতে লাগলো। তবুও তিনি ব্রিটিশদের কাছে কাছে মাথা নত করবেন না। আহত অবস্থায় তিনি গুহাতে গিয়ে আশ্রয় নিলেন। দুর্ভাগ্য বসত কোন এক নিজের লোকই ব্রিটিশদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। ছল করে তাকে ৯ই ফেব্রয়ারি ১৮৩৩ সালে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে বন্দি করার পর ঢাকা (বাংলাদেশে) পাঠানো হয়। এখানেই বন্দি অবস্থায় থাকাকালীন ১৭ই জুলাই ১৮৩৫ সালে এই মহান বীর যোদ্ধা তার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
আজও রাজা তিরোট সিংকে সকল বীর সন্তানদের সঙ্গেই স্মরণ করা হয়। কারন তিনি কখনো ব্রিটিশদের সামনে মাথা নত করেনি।
(তথ্যসূত্র সংগৃহীত)

Post a Comment

0 Comments

Update Posts

স্মার্ট নাগরিক গঠনে গ্রন্থাগারের ভুমিকা রচনা ১০০০ শব্দ
তালিবানি মুখোশ খুলে ঝাঁঝরা হয়েছিলেন সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় লাভ জেহাদীর, মাধ্যমে ধর্মান্তরিত হয়ে নির্যাতিত হয়েছে ধর্ষিত হয়েছে মারা গেছে এরকম দশটি কাহিনী
Disclaimer
১০টি বাংলাদেশের সেরা ক্যান্সার হাসপাতাল  10 best cancer hospitals in Ban...
১০ বছরে মাধ্যমিক, ১৬-তে ইঞ্জিনিয়ার, ক্যাটও পাশ করে ফেলল এই কিশোরী!
Top 14 Best Paying CPC/PPC Ad Networks
100% Proof - How to Get Back Suspended YouTube Channel Bangla - 100% Solution
Keyboard shortcuts for Windows
ইবনে সিনা হাসপাতালের ডাক্তার লিস্ট | Ibn Sina Hospital Dhanmondi Doctor ...
Goutom buddho biography গৌতম বুদ্ধের জীবনী গৌতম বুদ্ধের জীবনের বিস্ময়কর অজানা তথ্য  ইতিহাস জেনে নিন