বাদল সরকার (১৫ই জুলাই,১৯২৫ - ১৩ই মে,২০১১) একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নাট্যব্যক্তিত্ব।


বাদল সরকার (১৫ই জুলাই,১৯২৫ - ১৩ই মে,২০১১) একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন  নাট্যব্যক্তিত্ব।

যিনি থার্ড থিয়েটার নামক ভিন্ন ধারার নাটকের প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত। সত্তর দশকের নকশাল আন্দোলনের সময় প্রতিষ্ঠান বিরোধী নাটক রচনার জন্যে তিনি পরিচিত হন, মঞ্চের বাইরে সাধারণ মানুষের ভেতর নাটককে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রথম কাজ বাদল সরকারের। তাঁর নিজস্ব নাটক দল শতাব্দী গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে। ভারতে আধুনিক নাট্যকার হিসেবে হাবিব তনভীর, বিজয় তেন্ডুলকর, মোহন রাকেশ এবং গিরিশ কারনাডের পাশাপাশি বাদল সরকারের নাম উচ্চারিত হয়।

১৯২৫ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন বাদল সরকার। স্কুল ও কলেজ জীবনে তাঁর নাম ছিল সুধীন্দ্রনাথ সরকার। কিন্তু পরবর্তী কালে পরিচিত হয়েছিলেন বাদল সরকার নামে৷ স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক হয়ে ভর্তি হন শিবপুর বেংগল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। পেশাগত দিক থেকে ছিলেন টাউন প্ল্যানার৷ শিবপুর বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তাঁর অন্যতম সহপাঠী ছিলেন সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যাল। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করার পর টাউন প্ল্যানার হিসেবে কাজ করেছেন ভারতে ও বিভিন্ন দেশে। ইংল্যান্ড ও নাইজেরিয়াতে পেশার কাজে যান৷ আবার সাহিত্য-নাটকের প্রতি আগ্রহের জন্য বৃদ্ধ বয়সে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পারেটিভ লিটারেচার ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন৷ ১৯৯২ সালে সেখান থেকে এই বিষয়ে এম.এ পাশ করেন তিনি।
ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১১ সালের ১৩ই মে কলকাতাতে তাঁর মৃত্যু হয়৷ তাঁর নাটক সবসময়ই বহু আআলোচিত, অভিনীত হলেও তিনি শেষ দুই দশক প্রায় লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিলেন।
১৯৬৮ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার ও ১৯৭২ সালে পদ্মশ্রী খেতাব পান তিনি৷ ১৯৯৭ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি ফেলোশীপ থেকে ভারত সরকার তাকে সংস্থার সর্ব্বোচ্চ পুরস্কার “রত্ন সদস্য” পদক দেয়।
(সৌজন্যে : উইকিপিডিয়া)
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
|| “মৃত্যুর চেয়ে বেঁচে থাকা অধিক শ্রেয়” ||
বাংলা তথা ভারতীয় থিয়েটারের একটি স্পর্ধার নাম বাদল সরকার। থিয়েটার মানেই শুধু মঞ্চ নয়, বাংলা থিয়েটারকে তা চিনিয়ে দিয়েছিলেন। লাতিন আমেরিকার ‘তৃতীয় চলচ্চিত্র’-এর আদলে বাদল সরকার নির্মাণ করেছিলেন থার্ড থিয়েটার অর্থাৎ তৃতীয় থিয়েটার। দর্শক এবং অভিনেতার মধ্যে দূরত্ব থাকবে সামান্যই। থিয়েটারের নিজস্ব ভাষাকে নিজের মতো করে ভেঙে গড়ে মজবুত করে তুলেছিলেন ধীরে ধীরে। অর্থনীতি, সংস্কৃতি, রাজনীতি এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা চিরকাল স্বীকার করে নিয়েছিলেন। যার ফলে নিজের কাজের প্রতি কখনও আপোষ করতে হয়নি তাঁকে। তাঁর ‘থার্ড থিয়েটার’ সেরকম একটি চেষ্টার ফল। মূলত যাত্রা এবং দেশীয় ঐতিহ্যের নির্যাস নিয়ে এই থার্ড থিয়েটারের যাত্রা– যা একান্তই তাঁর নিজস্ব। থার্ড থিয়েটারের উৎপত্তি সামন্ত সমাজের সেই গুটিকয়েক শিক্ষিতের দ্বারা, যারা ভূস্বামী বা কৃষক কোনো শ্রেণির মধ্যে পড়েন না।
বাংলা নাটকের কতগুলো প্লটহীন চরিত্র। সেইসব চরিত্রের আবার সুনির্দিষ্ট কোনো বিন্যাস নেই, চরিত্রায়ন নেই। অভিনেতা–অভিনেত্রীরা ইচ্ছে মতো চরিত্র বাছাই করতে পারেন, নাটকের মাঝখানে চরিত্র বদলও করতে পারেন, এমনকি দর্শকেরাও অভিনয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন। আসলে তাঁর সৃষ্ট এক-একটি চরিত্র শূন্যে থেকেও যেন শূন্যে ভাসমান নয়। একটা অন্তর্লীন যাত্রার সঙ্গী তারা। যেখানে বেঁচে থাকা একটা স্বার্থক রূপায়ন। তাই প্রত্যেকটি নাটক চূড়ান্ত ইতিবাচক কথাই বলে ওঠে। বার্গম্যান তাঁর চলচ্চিত্রে যদি বলেন, কেন আমাদের বেঁচে থাকতেই হবে; তাহলে বাদল সরকার তাঁর থিয়েটারে বলবেন, মৃত্যুর চেয়ে বেঁচে থাকা অধিক শ্রেয়। তাঁর ভাবনায় বাংলা থিয়েটার নতুন আলো পাক।
(বঙ্গদর্শন)

Post a Comment

0 Comments

Update Posts

তালিবানি মুখোশ খুলে ঝাঁঝরা হয়েছিলেন সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় লাভ জেহাদীর, মাধ্যমে ধর্মান্তরিত হয়ে নির্যাতিত হয়েছে ধর্ষিত হয়েছে মারা গেছে এরকম দশটি কাহিনী
স্মার্ট নাগরিক গঠনে গ্রন্থাগারের ভুমিকা রচনা ১০০০ শব্দ
CS, RS, SA, PS, BS জরিপ কি?ভূমি জরিপ বা খতিয়ান চেনার সহজ উপায় জেনে নিন ৫ মিনিটেই জমির আরএস খতিয়ান
Disclaimer
   অজিজন বাঈ  বীরাঙ্গনা #_বিস্মৃত_বীরাঙ্গনা_আজও_অজানা
Top 14 Best Paying CPC/PPC Ad Networks
100% Proof - How to Get Back Suspended YouTube Channel Bangla - 100% Solution
25 Places to Find Free Images Online That You Will Actually Want to Use
পজিটিভ রিভিউ লিখে গুগোল থেকে ইনকাম করুন | পেমেন্ট প্রুফ সহ ভিডিও | Earn money from submit review https://reviews.capterra.com/
Contract Us